ফলোআপ

iii

( নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে )

আজ সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকায় জিবনের মায়া চেড়ে চলে যায় ছোট্ট এই শিশুটি ।চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পারলাম না । গতকাল রাতে তার কণ্ঠরস্বর অনেক ছোট হয়ে যায় । তাকে গতকাল বাম পায়ে ষ্টীলের পাত লাগানো হয়েছিল। তাই পায়ের যন্ত্রণা অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। অনেক কথাই বলতে চেয়েছিল ছেলেটি ।কিন্তু পারেনি কথা বলতে । কিছু খাওয়ার জন্য ছটপট করেছিল । কিন্তু ডাক্তার এর নিষেধ তাই মুখে এক ফোঁটা পানি খাওয়াতে পারিনি ।তার শরীর মুছে দেওয়া হয়। ওয়ার্ড বয় কে দিয়ে তার মল মুত্র পরিস্কার করানো হয় । নতুন বিছানায় রাখা হয় ছেলেটিকে । কিন্তু ছেলেটি বমি করতে লাগল ।বমি র রঙ দেখে বুঝা গেল তার বুকে গুরুতর আঘাতের কথা । ডাক্তার এর সাথে আলাপ আলোচনা করে ৪ টি রক্তের পরিক্ষা ইপিক হেলথ কেয়ার থেকে করানো হয়েছিল । আজ দুপুর ৩ .০০ টায় রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল । তার এখন পর্যন্ত কোন স্বজনকে খুঁজে পাইনি ।সামান্য চেষ্টা করেছিলাম এই ছোট ভাইটার জন্য কিছু করতে । কিন্তু ধরে রাখতে পারলাম না ।জানিয়া ছেলেটি কোন বাবা মার নাড়ি ছেড়া সন্তান । ছেলেটিকে বর্তমানে লাশ ঘরে রাখা হয়েছে । অনেক ভাই সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আমি ঋণী ।

আনায়নকারি ঃ যারা এই ছোট্ট শিশুটিকে রেল লাইনের পাঁশ থেকে তুলে এনেছেন তাদের প্রতি আমি ঋণী ।তাদের আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ। সুধু তাই নয় এই অজ্ঞাত ছেলেটি যখন আহত অবস্থায় রাস্তায় পরে ছিল কেউ ছেলেটিকে তুলতে চায়নি ।কোন গাড়ি তুলে এনে হাসপাতালে নেয়নি । অবশেষে একটি ভ্যান করে তাকে প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্য আনোয়ার সহ কিছু যুবক পারভেজ কে হাসপাতালে নিয়ে আসে ।

প্রসঙ্গত ঃ ছেলেটির পরনে লাল শার্ট ।বয়স আনুমানিক ৭ বছর। গত ১৫.০৮.২০১৬ তারিখ রাত ৮০৩.০ মিনিটে ২৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। ট্রেন দুর্ঘটনায় পা দু খণ্ডিত হয়ে যায় । । অনেক কষ্টে তার পরিবারের ঠিকানা সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হয়েছিল । ছেলেটি নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে । তার ভাষ্য মতে ,তার বাবার নাম ঃ বেলাল হোসেন ,মাতা ঃ বকুল , বাড়ির নাম ঃ কাসেম মোল্লার বাড়ি , ইসলামপুর বাজার , লক্ষ্মীপুর । তার ২ জন মামার নাম বলতে পেরেছে । ছেলেটির বড় মামার নাম ঃ বেলাল আর ছোট মামার নাম হেলাল । তাও সম্পূর্ণ পরিস্কারভাবে বলতে পারছিল না ।